Search Here

Breaking News

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত ট্রাইব্যুনাল কি আন্তর্জাতিক মানের ছিল?

যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের লক্ষ্যে গঠিত ট্রাইব্যুনাল কি আন্তর্জাতিক মানের ছিল?

উত্তরঃ না স্যার। মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের জন্য গঠিত ট্রাইব্যাল ছিল সম্পূর্ণ Domestic tribunal.

তাহলে সবাই যে বলে বিচার আন্তর্জাতিক মানের হতে হবে?
- যে অপরাধের বিচার হচ্ছিল তা হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ। আর আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার অর্থাৎ বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বাংলাদেশ না করতে পারলে যদি যুক্তরাষ্ট্রও এই বিচার করতে চাইতো তাহলে সেটাও আন্তর্জাতিক আইনের দৃষ্টিতে valid ছিল। এই ধরনের আন্তর্জাতিক অপরাধের বিচার অভ্যন্তরীণভাবে করলে কোন দোষ নেই।
উদাহরণস্বরুপ কম্বোডিয়া ট্রায়াল।

আপনারা যারা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্র তারা জানবেন।
Universal Principle অর্থাৎ বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের যে অভিযোগে বিচার হচ্ছে তা হচ্ছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আর এটিকে বলা হয় Universal principle আর এই অপরাধের বিচার দুনিয়ার যে কোন রাষ্ট্র করতে পারবেন।

কিভাবে সুগম হলো যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের পথ?
অনুচ্ছেদ ৪৭(৩) অনুসারে রাষ্ট্র নিন্মোক্ত অপরাধের বিচারের জন্য যদি কোন আইন প্রণয়ন করেন তাহলে তা এই সংবিধানের বিধানের সাথে অসামঞ্জস্য  বলে বেআইনী হবে না। অপরাধগুলো হলো:-
   - গণহত্যাজনিত অপরাধ
   - মানবতাবিরোধী অপরাধ
  -  যুদ্ধাপরাধ
  -  আন্তজার্তিক আইনের অধীন অন্যান্য অপরাধ

উপরিউক্ত অপরাধে অভিযুক্ত হলে যাদের বিচার করা যাবে তারা হলো:-
  - কোন সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য
  - প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্য
  - সহায়ক বাহিনীর সদস্য
  - কোন ব্যক্তি, ব্যক্তিসমষ্টি এবং
  - সংগঠন কিংবা যুদ্ধবন্ধীকে

আন্তর্জাতিক অপরাধ কোনগুলো?
কিছু অপরাধ আছে আর উপর সব রাষ্টই সমানভাবে এখতিয়ার প্রয়োগ করতে পারে। যেমন- যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যাজনিত অপরাধ,মানবতাবিরোধী অপরাধ।  এই অপরাধগুলো আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত বিধায় এগুলোকে আন্তর্জাতিক অপরাধ বলে।

অপরাধ আন্তর্জাতিক বলেই সার্বজনীনভাবে যেকোন রাষ্ট্র নিরপেক্ষভাবে তার বিচার করতে পারে। নুরেমবার্গ সামরিক ট্রাইব্যুনালের সনদ তিনটি বিশেষ অপরাধকে চিহ্নিত করে।  এগুলো হচ্ছে: ১) শান্তির বিরুদ্ধে অপরাধ, ২)  যুদ্ধ সংক্রান্ত অপরাধ, ৩) মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ। নুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনালের সনদ ও রায় আন্তর্জাতিক আইনের বিধান হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছে।  ফলে উল্লিখিত অপরাধের জন্য যেকোন রাষ্ট্রের আদালত অন্য রাষ্ট্রের অপরাধীকে বিচার করার অধিকারী। 
অন্যদিকে  "গণগত্যা প্রতিরোধ ও গণহত্যার জন্য শাস্তি সংক্রান্ত কনভেনশন, ১৯৪৮ অনুযায়ী "গণহত্যা সার্বজনীন অপরাধ"।  আমরা জানি গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের বিচারের মেয়াদ কখনো শেষ হয় না। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ যদি ১৯৭১ সালে সংঘটিত  গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করতে না পারে, তাহলে বিশ্বের যে কোন রাষ্ট্র চাইলে এর বিচার করতে পারবে।

বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল (International Crimes Tribunal) কে কেন আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত বলা হয়?
- যে অপরাধের জন্য যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে সে অপরাধগুলো আন্তর্জাতিক অপরাধ । যেহেতু আন্তর্জাতিক অপরাধ (International Crimes) এর বিচার করছে কোন ট্রাইব্যুনাল তাই নামকরণ করা হয়েছে "International Crimes Tribunal". আর এই বিচারের লক্ষ্যে প্রণীত আইনটি হচ্ছে International Crimes Tribunal Act,1973.

২০১১ সালে ১৫তম সংশোধনীর মাধ্যমে ৪৭(৩) অনুচ্ছেদ সংশোধন করা হয় এবং যুক্ত করা হয় আন্তর্জাতিক অপরাধের জন্য যে কোন ব্যক্তি বা সংগঠনের বিচার করা যাবে। আর এই বিধানের মাধ্যমে ১৯৭১ সালে জামায়াতে ইসলামী কর্তৃক সংঘটিত অপরাধকে বিচারের আওতায় আনা হয়। জামায়াতের রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিল করা হয়।

যুদ্ধাপরাধীরা কি কি মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে?
- অনুচ্ছেদ ৪৭ক

No comments